আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টুডেন্ট পলিটিক্স
এদেশের স্টুডেন্ট দের পলিটিক্যাল এংগেজমেন্ট ভিন্নরকম! এতদিনেও কোন ক্যাম্পাসে কোন রাজনৈতিক দলের ছাত্র শাখার কোন মিছিল, মিটিং, দাবি-দাওয়া বা ভোট চাইতে দেখলাম না। কোথাও একটা পোষ্টার ও নেই, যে ভোট ফর অমুক বা তমুক! ভার্সিটির হলে রাজনৈতিক ২ গ্রুপের মারামারিতে কেউ মরেনা বা আহত হয়না। ট্রাম্পরে সাপোর্ট করতো দেখে বাইডেন আসার পরে কাওকে হলে থেকে মেরে বের করে দেয়ার খবর ও শুনিনি। অন্য দলের কোন পোস্ট স্যোশাল মিডিয়াতে শেয়ার বা লাইক দেয়ার জন্য ও হাত/পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেয়ার ও নজির নেই! অনেকেরই পলিটিক্যাল ভিউ আছে আর তার সমর্থনে অনেকেই স্যোসাল মিডিয়াতে লিখে ও। আমার কিছু আমেরিকান ফ্রেন্ডকে দেখেছি নিজের পছন্দের সিনেটর/প্রেসিডেন্ট ক্যান্ডিডেটের কোন স্টিকার ল্যাপটপে লাগানো আছে। সেটা তার নিজস্ব পছন্দ আর এটা নিয়ে নাক গলায় না কেউ। পলিটিক্যাল সাইন্সের পুরা মাস্টার্স প্রোগ্রামের শত শত পলিটিক্যাল ডিসকাসনে কেউ নিজেদের রাজনৈতিক মতামত নিয়ে অন্যের সাথে লেগে যায়নি। কোন ফ্যাকাল্টির রাজনৈতিক ভিউ ক্লাসের পড়ানো থেকে বুঝা মুশকিল! যে হতো, সেটা হলো একেকটা পলিসি বা বিলের গঠনমূলক সমালোচনা!
পলিটিক্যাল সাইন্সের পুরা মাস্টার্স প্রোগ্রামের শত শত পলিটিক্যাল ডিসকাসনে কেউ নিজেদের রাজনৈতিক মতামত নিয়ে অন্যের সাথে লেগে যায়নি।
শিক্ষকদের মধ্যে কোন লাল/সাদা/নীল দল নেই। শিক্ষক নিয়োগে কোন রাজনৈতিক নেতা বা অন্য কারো সুপারিশ লাগেনা। শিক্ষকদের কারো সাথে লবিং করা লাগেনা প্রমোশনের জন্য। যার যার যোগ্যতায় নিয়োগ পাচ্ছে আর প্রমোশনের জন্য ও ক্রাইটেরিয়া দেয়া আছে। লেকচারার থেকে এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হতে হলে এই এই পাবলিকেশন, রিসার্চ, গ্র্যাণ্ট ইত্যাদি লাগবে। তারপর কমিটি রিভিউ করে সিদ্ধান্ত নিবে আপনি প্রফেসর হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন কিনা! সিস্টেমেটিক সব কিছু!
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট দের এহেন পলিটিক্যাল এফিলিয়েশন, কোন দলের পক্ষে দাংগা-হাঙ্গামা, লবিং বা রাজনৈতিক জায়গায় বড় অবদান রাখা ছাড়াই একটা বিশাল ডেমোক্রেটিক দেশ এখনো মোটামুটি লেভেলের ডেমোক্রেসি টিকিয়ে রেখে চলে যাচ্ছে কিভাবে? আমাদের দেশে কেন সম্ভব হয়না? যাক, বেশি বিশ্লেষণের দরকার নেই। তবে এতটুকু বলতে পারি, এ বেশ ভালো সিস্টেম! ক্যাম্পাস গুলো নিরাপদ, হলের সিটের জন্য দল করা লাগেনা, মিছিল মিটিং এ গিয়ে সময় নষ্ট করা লাগেনা, আবারার রা বেশ নিরাপদে থাকে আর নিজেদের স্যোসাল মিডিয়াতে প্রেসিডেন্টের পোস্টের নিচে ইচ্ছেমত গালি দিয়ে ও গুম হয়না কেউ!
দেশ হিসেবে আমেরিকা ভালো বা খারাপ নিয়ে ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে, আমার অভজারভেশন জাস্ট ক্যাম্পাসের পলিটিক্স নিয়ে। সুস্থ্য ক্যাম্পাস আমার দেশেও থাকুক, এ কামনাই করি।