মনপ্রকৌশল: স্বপ্ন দেখার অনুশীলন


...

স্বপ্নের চেয়ে বড় মন ভালো করার উপায় আর কিছুই হতে পারে না। কিন্তু দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায়, তখন স্বপ্ন দেখবেন কীভাবে?

আছে, উপায় আছে। মন প্রকৌশলের অংশ হিসাবে, মন ভালো করার কৌশল হিসাবে খুব গুছিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করুন। তবে তা ঘুমের মাঝের স্বপ্ন না, বরং জেগে জেগে স্বপ্ন দেখা। স্বপ্ন দেখার প্রজেক্ট হিসাবে শুরুতেই কাগজে কলম নিয়ে বসে পড়ুন। অবশ্যই কাগজ কলম নিয়ে বসতে হবে, কম্পিউটার/কীবোর্ড নিয়ে বসলে চলবেনা। অথবা সব মাথার ভিতরে রেখে স্বপ্ন দেখতে বসলে চলবেনা, কারণ মনের মাঝে পরিকল্পনা রেখে দেয়া আর পানির উপরে লেখা, একই কথা।

কাগজ কলমে লেখার আরেকটা দরকারী দিক হলো, আপনার মন থেকে হাতের কলম পর্যন্ত পৌছাতে পৌছাতে ভাবনাটা, স্বপ্নটা আরো অনেক গোছানো হবে।

প্রথম কাজ — আপনি কী হতে চান, পেতে চান, তা লিখে ফেলেন। স্বল্প মেয়াদে না, আমি বলছি দীর্ঘ মেয়াদে, আজ থেকে ৫ বছর পরে, সেই সময়ের কথা। একটা দুইটার বদলে আপনি দরকার হলে দশটা জিনিষ লিখেন, যা আপনি পেতে চান, যা আপনি হতে চান। হতে পারে, আপনি দ্বিতীয় কাজ — এই তালিকার কোন জিনিষটা পেতে বা কী হতে আপনি সবচেয়ে বেশি আসলেই চান? এবং সেটা পেলে বা সেটা হতে পারলে আপনার কী লাভ হবে? প্রতিটি জিনিষের ক্ষেত্রে এটা লিখে ফেলেন। এটা লেখাও খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনি আসলেই এইগুলা চান কি না, পেলে আপনার জীবন কি পাল্টাবে, সেটা ভাবতে হবে।

স্বপ্নের কাছে পৌছানো যদি বহু দীর্ঘ একটা যাত্রা হয়, তবে আজকে শুরু করে দিন প্রথম পদক্ষেপ।

তৃতীয় কাজ — এবারে তালিকাটার দিকে তাকান, ভালো করে ভাবেন। কোনটা সবচেয়ে আরাধ্য ও জীবন পাল্টে দেয়া জিনিষ? আপনি কোনটা পেলে সবচেয়ে বেশি সুখী হবেন? এইখানে কিন্তু আপনার নিজের সুখের কথা ভাবতে হবে। অন্য কাউকে খুশি করা না, স্বার্থপর শোনালেও নিজে কোনটা পেলে বা হলে সুখী হবেন, সেটার ভিত্ত্বিতে তালিকার এন্ট্রিগুলার ক্রম নির্ধারণ করে ফেলেন। এবং চতুর্থ কাজ — এটা খুব সহজ। তালিকার প্রথম কয়েকটা স্বপ্ন, আরাধ্য কিছু, সেগুলাকে বেছে নিন। চোখ বন্ধ করে কল্পনা করুন, আপনি সেটা পেলে কতটা সুখী হবেন।

এবারে চোখটা খুলে কাগজ কলম নিয়ে আরেকবার বসে যান, এই স্বপ্নগুলাকে পেতে হলে আপনাকে কী করতে হবে। তার পর? শুরু করে দিন স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাওয়া। স্বপ্নের কাছে পৌছানো যদি বহু দীর্ঘ একটা যাত্রা হয়, তবে আজকে শুরু করে দিন প্রথম পদক্ষেপ। আর স্বপ্ন দেখার এই প্রজেক্টের শেষ কথাটা বলি, স্বপ্ন দেখবেন অনেক বড়, অনেক লম্বা লম্বা। স্বপ্ন দেখার প্রজেক্টে লেগে থাকলে যদি সেই বড় স্বপ্নের সূর্যের কাছে না-ও পারেন পৌছাতে, তবুতো তার কাছাকাছি, হয়তোবা স্বপ্নের চাঁদের কাছে যেতে পারবেন এক সময়ে।

স্বপ্ন দেখার প্রজেক্ট — শুরু হোক আজ থেকেই। নাহ, ভুল বললাম, এক্ষুনি শুরু হোক, শুরু করে দেন।